19 May 2024, 06:31 pm

বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছিল বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জ্বালানি সংকট ও সারাদেশে চলমান লোডশেডিং ইস্যুতে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, যাদের সময় (বিএনপির আমলে) বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় জনগণের বুকে গুলি চালানো হয়েছিল, যারা জাতীয় গ্রিডে এক ইউনিটও বিদ্যুৎ জোগান দিতে পারেনি, তারা আজকের সংকট নিয়ে অর্বাচীন মন্তব্য করবে এটাই স্বাভাবিক।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।

এর আগে গতকাল বুধবার (২৬ অক্টোবর) সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণের ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বিদ্যুৎ সরবরাহে চরম বিপর্যয়ের সব দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগের দাবি জানায় বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, সীমাহীন দুর্নীতি, অযোগ্যতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বমানব আজ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট অতিবাহিত করছে। পৃথিবীর বৃহৎ অর্থনীতির দেশসমূহকেও আশঙ্কাজনক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ প্রায় সব রাষ্ট্রেই খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। যার অভিঘাতে আজ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংকটের মুখোমুখি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক এ সংকটময় পরিস্থতি বিবেচনা না করে বিএনপি নেতারা দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে নানা ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত। কথায় কথায় সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন। বিএনপি মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন- বিশ্বের সব দেশের সরকারই কি তাহলে পদত্যাগ করবে? সব দেশে সরকার পদত্যাগ করলে সমগ্র বিশ্বই তো সরকারবিহীন হয়ে পড়বে! নিশ্চিতভাবে পৃথিবীর সব রাষ্ট্র সরকারবিহীন চলতে পারে না। এ পরিস্থিতিতে সব দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব হলো ধৈর্যের সঙ্গে সংকট মোকাবিলা করা।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি বিরোধীদলেরই দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব এবং কর্তব্য রয়েছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলামরা দায়িত্বশীল বিরোধীদলের ভূমিকা পালন না করে তাদের চিরায়ত মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির রাজনীতি অব্যাহত রেখেছেন। দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা ‘হাওয়া ভবন’ খুলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল; গণবিরোধী নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। জনকল্যাণের অঙ্গীকারকে পরিহার করে তারা গোষ্ঠীতন্ত্র ও সিন্ডিকেটতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেই ধ্বংসস্তুপ থেকে সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও কর্মপ্রয়াসের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সম্ভাবনাময় অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসভায় অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। বিএনপির আমলে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় জনগণের বুকে গুলি চালানো হয়েছিল। তারা জাতীয় গ্রিডে এক ইউনিটও বিদ্যুৎ জোগান দিতে পারেনি। তারা আজ সংকট নিয়ে অর্বাচীন মন্তব্য করবে, এটাই স্বাভাবিক।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মহামারি করোনার অভিঘাতের দগদগে ক্ষতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্ব এক মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। গড় প্রবৃদ্ধিও মারাত্মকভাবে অবনমনের দিকে। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে উন্নয়নশীল, স্বল্পোন্নত ও গরিব দেশসমূহকে।

তিনি বলেন, এ পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের সরকার স্থিতিশীলতা বজায় রেখে সংকট মোকাবিলায় প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় সাময়িকভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এমতাস্থায়, বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের উপায় হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানির অন্যতম উৎস পারমাণবিক শক্তি। সে লক্ষ্য অর্জনে শেখ হাসিনার সরকার আগে থেকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিনির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অবারিত দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদাও বহুগুণ বেড়েছে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে লোডশেডিং ছাড়াই বিপুল এ চাহিদা পূরণ করা সম্ভবপর হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক সংকটের কারণে সাময়িকভাবে কিছুটা কৃচ্ছ্রতা সাধন ও পরিস্থিতি মোকাবিলার স্বার্থে বিদ্যুতে রেশনিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার সংকট মোকাবিলায় অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কথা আজ প্রমাণিত যে, বৈশ্বিক এই সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে ধরে রাখার মতো নেতৃত্ব যদি কেউ থেকে থাকেন তিনি হলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি অতীতের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা অব্যাহত রাখুন। তার গৃহীত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রতি ধৈর্য ও দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ্।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4846
  • Total Visits: 749951
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১১ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৬:৩১

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018